বৃষ্টি! হ্যা বৃষ্টি, তোমাকেই নিয়ে গল্প বলছি আমি। তোমাকে নিয়ে বলার হাজারটা কারণও আছে আমার কাছে। রয়েছে হাজার রকম প্রয়োজন। তোমার জন্য কত শুণ্যতা, অভাব, আরো কত হাহাকার। তোমার স্পর্শে জন্ম হয় কত শত অগনিত প্রাণের, সৌন্দর্য্যের, শ্রুতিমধূর ধ্বণি আর সৃষ্টির। সৃষ্টি। হ্যা! হ্যা! সৃষ্টির গানে, বিলয়ের গানে পৃথিবীর বুকে তুমিই অমূল্য।
তোমার তৃষ্ণাতেইতো সবুজ জমিন রক্তাক্ত মরুভূমি হয়ে যায়। ধূধূ প্রান্তর! বালূময়, বৃক্ষহীন ঊষরতর রুক্ষ মরুভূমি হয়ে যায়।
আবার এদিকে দেখো! তোমার গাঢ় স্পর্শে সৃষ্টি হয় সীমাহীন সবুজ বনানি। মাইলের পর মাইল, দূর বহুদূর ধরে সবুজ গাঢ় বনভূমি। গাছ, লতাগুল্প, ঘাস, ফুল, সুমিষ্ট ফল। আর এই সবুজের লোভেইতো জন্ম হয় হাজার রকমের জন্তু জানোয়ার, কত শত পাখি, কীট ও পতঙ্গদের। কত রকম গান, উৎসব আর জীবনের কোলাহল।
তোমার যত্নেইতো পৃথিবীর মাটি সবুজ ফসলে রূপ নেয়। মানুষের ঘরে আসে খাদ্য, আসে উৎসব, আসে ভবিষ্যত জীবনের আশা আর আসে নবজাতক মানুষের দল। বুঝে বা না বুঝে তারাওতো ভালোবাসতে শুরু করে তোমাকে। কত বন্দনা, কত গান, শ্রদ্ধা-সমারহ, আপন করে নেয়ার শতরকম তীব্রতা। শতবর্ষ আগেকার নবজাতক পূর্বপুরুষদের মতই একইরকম অবিকল এই ভালোবাসা। পরিবর্তনহীন, এ যেন অনন্ত এক মায়াময় গতিশীল সংযোগ।
বৃষ্টি! কে জানে, হয়তো ভালোবাসার মত বিষয়টি তুমিই প্রথম শিখিয়েছিলে মানুষকে। অথবা অন্তত আমার আদিপুরুষকে শিখিয়ে থাকবে নিশ্চয়। জানতে চাইতো পারো, কেন বলছি এসব কথা? আমিও ভাবি, কেন এমন হয়। উত্তর পাইনা। তুমিকি জানো কেন এমন হয়? কেন ভালবাসার কথা মনে উঠলেই তোমার মুখটা ভেসে ওঠে বৃষ্টি? পৃথিবীতে তোমার মত করে আর কারো জন্য এত তীব্র ভালবাসা অনুভব করি না আমি। ভালবাসার গান শুনলে তোমার কাছে যেতে মন চায়। তোমায় নিয়ে গল্প বলতে মন চায় বৃষ্টি।
আর তখনি আমি আমার রক্তাক্ত ধূধূ প্রান্তর রুক্ষ মরুভূমি মনকে বৃষ্টির গল্প শোনাই। তোমার গল্প শোনাই। ঘুঙ্গুর, ঘুঙ্গুর শব্দ করে সৃষ্টির নৃত্যে গড়া অপরূপ রূপবতি তোমার গল্প।
আমি তোমায় ভালবাসি বৃষ্টি!